নগরীর আখালিয়ায় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর পক্ষের লোকজনের হামলা স্বামী সহ দু’জন গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতরা সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ব্যাপারে জালালাবাদ থানাধীন আখালিয়া, মোহাম্মদিয়া আ/এ বাসিন্দা মৃত হাজী মোঃ সলিম উল্লাহ স্ত্রী আহত মোঃ কয়েছ মিয়া’র মা ছমিরুন্নেছা বাদী হয়ে সিলেট শেখঘাট কলা পাড়ার নছর উদ্দিনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) নছর উদ্দিনের মেয়ে জেসমিন বেগম (২৮) শেখঘাট, কলাপাড়ার জোবায়ের মিয়া, (৪০) রুস্তম মিয়া (৪৫), উভয় পিতা-অজ্ঞাত, সাং-কুমারগাঁওয়ের লাল মিয়া (৪৫), পিতা-অজ্ঞাত, লাল মিয়ার ছেলে রাহিম মিয়া (২০) সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আসামী করে এসএমপি জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০৩/১৪০
তাং-০৪-১০-২০২৫। মামলা সুত্রে সূত্রে জানা যায়, মোঃ কয়েছ মিয়া (৩০) এর সাথে ৬ বছর আগে ২নং বিবাদী জেসমিন বেগমের বিবাহ হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ৫ বছরের একজন ছেলে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিবাদী জেসমিনের উশৃঙ্খল আচরনের কারনে সংসারে প্রতিনিয়ত অশান্তি বিরাজ করছে। এমনকি বিবাদী তার স্বামীর নামে কিছুদিন পূর্বে কোর্টে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট যৌতুকের মামলা করেছিল যা বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দেয়। এইসব বিষয়ে অনেকবার বিচার সালিশও হয়েছে। সন্তানের কথা চিন্তা করে জেসমিনকে সম্মান
সহকারে পরিবারের সাথে রাখা হয়েছে।
বিগত কিছুদিন যাবৎ বিবাদী জেসমিন গোপনে কারোসাথে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনে কথা বলা সহ পরিবারের সদস্যদর অগোচরে কারো সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েগেছে মর্মে নিশ্চিত হওয়ায় উক্ত বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এবং তাদের একমাত্র সন্তানের কথা চিন্তা করে উক্ত পথ থেকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করিলে বিবাদী উল্টা ক্ষিপ্ত হয়।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকাল অনুমান ৪ টার সময় কয়েছ মিয়া শহর থেকে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে বাড়ীতে ফিরত আসার সময় পাড়ার মাদ্রাসার মাদরাসাতুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ সিলেট এর পাশে রাস্তায় অপরিচিত একজন ছেলের সাথে বিবাদী জেসমিনকে কথাবলতে দেখে সে এগিয়ে যায়। তখন কয়েছকে দেখে অজ্ঞাতনামা ছেলেটি দৌড়াইয়া চলে যায়। কয়েছ তার স্ত্রী জেসমিনের কাছে ছেলের পরিচয় ও পালিয়ে যাওয়ার ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করলে বিবাদী জেসমিন কোনো সদোত্তর না দিয়া উল্টা রাগ দেখাইয়া বাড়ীতে এসে নিজের ঘরে ঢুকে দরজায় খিল দিয়ে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলতে থাকে। স্ত্রীর এহেন আচরণে মানসিক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত কয়েছ মিয়া কিছুক্ষণ চিল্লাচিল্লি করে বারান্দার এক কোনে বসে ছিল।
এই পরিস্থিতিতে ২২ সেপ্টেম্বর
সন্ধ্যায় উপরে বর্ণিত ০১ নং বিবাদীর নেতৃত্বে ৩, ৪, ৫, ৬ নং বিবাদীগণ বেআইনী জনতাবদ্ধে দা, লাঠি, রোল ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র সহকারে বাদীর বসত রাড়ী উঠান ও ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে কয়েছ কে বারান্দায় পেয়ে উপর্যপুরী মারপিট শুরু করেন। ০১ নং বিবাদী রাসেল মিয়া তার হাতে থাকা কাঠের রোল দিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েছ এর মাথা লক্ষ করিয়া আঘাত করিলে কয়েছ তার বাম হাত দিয়া ঠেকায় এবং আঘাতের ফলে তার বাম হাতে গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম হয় ও অন্যান্য বিবাদীরা এলোপাথারী মারতেছিল। কয়েছের শোরচিৎকার শুনে বাদী সহ তার ৩ নম্বর ছেলের ঘরের নাতি তামিম (১৬) আগাইয়া আসলে ৩নং বিবাদী জোবায়ের তার হাতে থাকা দা দিয়া কোপ দেয়। জান বাঁচাতে তামিম লাফ দিয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে দায়ের কোপ তামিমের পায়ে লেগে রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। বাড়ীতে আর কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় মহিলারা অসহায়ের মতো কয়েছ ও তামিমকে বিবাদীদের হাতে মার খাইতে দেখা ছাড়া কোনো কিছু করার ক্ষমতা ছিল না।
২নং বিবাদী জেসমিন তার রুম থেকে একটি ট্রাভেল ব্যাগ নিয়া বের হয়ে আসলে বিবাদীরা অকথ্য ভাষায় গলিগালাজ করা সহ উক্ত বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বিবাদী জেসমিন সহ আসামীগণ বাদীর বাড়ী থেকে বের হয়ে চলে যায়। হামলাকারীরা যাওয়ার পর
আশেপাশের লোকজন দৌড়াইয়া আসলেতাদের সহায়তায় গুরুতর আহত কয়েছ ও তামিম কে ওসমানী হাসাপাতালে পাঠানো হয়।
হামলা ও ঘটনার সময় বিবাদী জেসমিন বেগম কয়েছ মিয়ার ঘরের ওয়াড্রপের ড্রয়ার হইতে নগদ ৫,০০০/ (পাঁচ হাজার) টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণলংকার, মূল্যবান কাপর চোপর সহ অনুমান ৭,০০,০০০ (সাত লক্ষ) টাকার মালামাল চুরি করে নিয়া গেছে বলে মামলায় উল্লেখ করেন বাদী ছমিরুন্নেছা।
উপরোক্ত বিষয়ে তদন্ত পূর্বক বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের
প্রতি জোর দাবী জানানো হয়।